ভাই আব্দুল রাহমান

A portrait of an oldman with sindhi cultural dress topi,patka,and ajrak sindhi man portrait from Sindh Pakistan Asia,daylight beautiful photo.

কেউ তাকে ভাবতো ভারবাহী পশু।কেউ ভাবতো লোকটি দরবেশ, ঈশ্বর পাগল ব্রজ্যা ফকির। সে দুটিই হতে পারে। দেখতে লোকটি রোগা, একটু লম্বা। গায়ের রং গমের মতো। তার শরীর একেবারে নগ্ন থাকতো এমন নয়। একটি পুরনো কম্বলে ঢিলেঢালাভাবে মোড়া থাকতো।সবসময় তাকে দেখে মনে হত যে সে আধ্যাত্মিক আলোতে বুঁদ। সে সবসময় আল্লা, ভগবানের ঘর পরিদর্শন করতেন। এক্ষেত্রে তার কোন ধর্মীয় বাদবিচার ছিল না। সিন্ধের সুক্কের জেটিতে সাধারণ মানুষ একত্রে বুথগুলির আশেপাশে জড় হয়ে  রেলের গুদাম ঘরের দিকে মুখ করে হিন্দু ধার্মিক কবি সামির বই থেকে শ্লোক পাঠ করতো।আব্দুল রাহমান তাদের সাথে যোগ দিতো এবং আনন্দ সহকারে সে সব মধুর শ্লোক শুনতো।আর মাঝে মাঝে বিড়বিড় করে নিজেকে বলতো, ‘ভাই আব্দুল রাহমান, তুমি কী অনুধাবন করতে পারছো? কখন তুমি শুরু করবে আলো দেখতে?’

একদিন সে হোঁচট খেলো একটি পাথরে। সে নিজেকে বললো, ‘ভাই আব্দুল রাহমান, তুমি কী উদ্ধত আর অহংকারী!মাথা উঁচু করে হাঁটছো! যদি তুমি নিচের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে তাহলে হোঁচট খেতে না।’ এই বলে কয়েক পা বাড়িয়েছে মাত্র সে আবার নিজেকে ধমক দিলো, ‘ভাই আব্দুল  রাহমান, কত স্বার্থপর তুমি! পাথরটি যেখানে ছিল ওখানেই ফেলে রাখা কি ঠিক হলো?’ একটু  বিরতির পর আবার সে ভাবগম্ভিরভাবে বললো, ‘ভাই আব্দুল রাহমান, যদি তুমি ভালো মানুষ হও তাহলে তুমি পাথরটি রাস্তা থেকে তুলে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।’ এবং সে ফিরে গিয়ে  পাথরটিকে ছুঁড়ে ফেলে দিলো।

সে নিজের সাথে নিজে কথা বলতে অভ্যস্ত ছিল। কখনো দার্শনিক হিসাবে বন্ধুর সাথে, আবার কখনো এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির সাথে যেমন করে কথা বলে ঠিক সে ভাবেই। আর  সবসময় তার সম্বোধনের ধরণ ছিল, ‘ভাই আব্দুল রাহমান’।যদি কেউ তাকে বলতো,  ‘আপনি কি ক্ষুধার্ত? আপনি কি খেতে চান?’ সে নিজের দিকে ফিরে নিজেকে জিজ্ঞেস করতো, ‘ভাই আব্দুল রাহমান, সে জানতে চাচ্ছে যে তুমি কি ক্ষুধার্ত? তুমি খাবে কি না?’  এবং সে একটু ভেবে উত্তর দিতো একটি পার্সি উক্তির সাহায্য নিয়ে, ‘একজন অবশ্যই খাবে বাঁচার জন্য, অবশ্যই    বাঁচবে না শুধু খাওয়ার জন্য।’ এভাবেই প্রথমে সে নিজের সাথে নিজে পরামর্শ করতো এবং  তারপর সে উত্তর দিতো। সে পার্সি কবিতা লিখতো, হাফিজ গুলে খাওয়া ছিল, এবং বেশ অনর্গল বলতে পারতো সিন্ধি কবি শা আব্দুল লতিফ ও সামির কবিতার বেশ কিছু অংশ।আর তিনি সিন্ধির  তিন নম্বর  খ্যাতিমান কবি সাধু সাচালের যথার্থ শিষ্য ছিলেন। সে উর্দুও জানতো। যখন পাঞ্জাব থেকে উর্দু লেখা চিঠি আসতো তখন চারিদিকে তার খোঁজ পড়ে যেত চিঠি পড়ে ব্যাখ্যা করার জন্য। সে ছিল খুব নম্র ও শান্ত স্বভাবের। কোনকিছুর প্রতি তার লোভ ছিল না। চাহিদা ছিল খুব সামান্য। এবং খেতো  যৎসামান্য। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা সব ঋতুতেই সে তার শরীরে পুরাতন লেপটি  মুড়ে থাকতো।রাতে সে এটি গায়ে বিছিয়ে নিতো। যখন গরমে সকলে হাঁসফাঁস করতো তখনো সে একেবারে অবিচলভাবে তার ‘গদরি’ মুড়ে পড়ে থাকতো গরমের হাত থেকে রেহায় পেতে। কে জানে গদরির তলে সে কী গোপন কথা তার স্বর্গীয় প্রেমিকার সাথে বলতো!

একদিন একটি নিরীহ লোক একটি ফৌজদারি মামলায় জড়িয়ে পড়ে। তাকে দোষী সাজানো  হয়। সে না কী এক অর্থবান মুসলমান শেঠের সোনার হাতঘড়ি চুরি করেছে। পুলিশ হাতেনাতে তার প্রমাণও পেয়েছে ও সাক্ষীও জোগাড় রয়েছে ।লোকটির বিরুদ্ধে প্রমাণ খুব মজবুত। তার ছাড়  পাওয়ার আশা ক্ষীণ।শেঠ খুব প্রভাবশালী মানুষ। দোষীর বক্তব্য তাকে মিথ্যাভাবে ফাঁসানো হয়েছে।একদিন সে শেঠের বাড়ির পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। তা দেখে শেঠের মাথায় খেলে গেলো যে সে  না কী তার বাড়ির মেয়েদের দিকে অশোভনিয় কিছু আকার ইঙ্গিত করেছে। ফলে লোকটিকে তারা প্রায় পিটিয়ে মেরেই ফেলছিলো।কিন্তু ভাই আব্দুল রাহমান সে সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়াতে লোকটি মৃত্যুর মুখ থেকে ফেরে। শেঠ কে থামায় কে! সে শান্ত হতেই চায় না। তাঁর রাগ যে লোকটি তার সম্মানে কু-নজর দিয়েছে।এরপর তার আর বাঁচার অধিকার নেই। শেঠ একজন সম্মানীয়  লোক। সম্মান হল সবার উপরে…

আব্দুল রাহমান নিজের সাথে কথোপকথন শুরু করলেন, ‘ভাই আব্দুল রাহমান, শেঠ কিছুতেই বিরত হবে না। তাঁর সম্মান তাঁর কাছে খুব মূল্যবান।তাঁর একটি বোন আছে। বয়স পঁয়ত্রিশ। শেঠ ছেলে খুঁজছে না। কারণ বিয়ে দিলে তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তির কিছুটা হাত ছাড়া হবে। একজন মহিলা অবশ্যই স্বামীর ঘর করবে অথবা…’ তার ভিতরের দার্শনিক আব্দুল রাহমান তাকে থামিয়ে দিল। ‘না,ভাই আব্দুল রাহমান, পরের ব্যাপারে অত নাক গলানো ঠিক নয়। তুমি বরং শেঠের কথাতে ফিরে এসো। যদি শেঠ যুক্তি না মানতে চায় তাহলে তুমি সব সত্য আলোতে নিয়ে আসবে।’ এখন আর আব্দুল রাহমান নিচু গলায় নিজের সাথে শলাপরামর্শ করছে না। তার কথা থেকে এখন উপস্থিত লোকজন আসল রহস্যের হদিশ পেলো। ফলে বেচারা নিরীহ লোকটি এ যাত্রায় রক্ষা পেলো।কিন্তু শেঠের শঠতা ও নীচতা সকলের মুখে  মুখে রটে গেলো। শেঠ তাঁর সম্মান হারালো। সেজন্য এই সাজানো মামলা।

শেঠ সবকিছু অস্বীকার করলো। সে তিন চারটি প্রতিরক্ষা সাক্ষী কিনে নিয়েছিল।তাদের কেউ কোর্টে হাজিরা দিল না বা কোন কিছু না জানার ভান করলো। সুতরাং বাকি থাকলো আব্দুল রাহমান।তার মতো একজনকে উইটনেস বক্সে তুলতে ডিফেন্স কাউন্সেল সত্যিকারের অসহয়তা বোধ করছিলো। কিন্তু দোষীর পুরো বিশ্বাস ছিল আব্দুল রাহমানের প্রতি। ঈশ্বরভীতু মানুষ হিসাবে তার প্রতি আস্থা রাখা যায় যে সে ধ্রুব সত্য তুলে ধরবে।

একদিন যখন আব্দুল রাহমান কোর্টের তলব পেল সে নিজেকে বললো, ‘ভাই আব্দুল রাহমান, তোমার ডাক এসেছে কোর্টের হাজিরার। কোর্ট সম্মানের জায়গা।’ তার অর্থ এই যে সে জুতো না পরে কোর্টে যাবে না। সে একজোড়া জুতো জোগাড় করলো। নিজের মর্যাদা বাড়াবার জন্য নয়, কোর্টের সম্মান রাখতে। প্রত্যেক শুনানিতে সে তার সেই পুরনো গদরি গায়ে জড়িয়ে জুতোজোড়া হাতে নিয়ে সে কোর্টে যেত। এটি ছিল সিন্ধি গ্রামবাসীদের একটি প্রথা। যখন প্রমাণ দিতে ডাক আসতো তখন সে  জুতোজোড়া পরে সাক্ষী বক্সে উঠতো ।এ সময় গদরিটিকে সে লম্বাভাবে ভাঁজ করে গলায় গলাবন্ধনি হিসাবে ঝুলিয়ে রাখতো। সে খুব কম সময়ই ভিতরে প্রবেশ  করতো যদি উর্দি-পরা পিয়ন তাকে জুতো বাইরে খুলে প্রবেশ করতে নির্দেশ দিত।

‘ভাই আব্দুল রাহমান,’ সে নিজে নিজে বলতো, ‘কোর্টের পিয়ন তোমাকে খালি পায়ে ভিতরে প্রবেশ করতে বলছে যাতে করে তোমাকে সম্মানীয় ব্যক্তি বলে মনে হয়। তাকে বলো যে  জুতোজোড়া তুমি সংগ্রহ করেছো সেই উদ্দেশ্যেই।’ সে তার অন্তরের কথায় সাড়া দিলো এবং জুতো  পরে কোর্টের ভিতরে প্রবেশ করলো। ম্যাজিস্ট্রেট তাকে দেখে হাসলো।উইটনেস বক্সে গিয়ে যখন সে দাঁড়া্লো ম্যাজিস্ট্রেট জিজ্ঞেস করলো সে কেন গদরি গলায় জড়িয়ে আছে।আব্দুল রাহমান নিজের  দিকে তাকিয়ে তার স্বাভাবিক ঢঙে নিজের সাথে পরামর্শ শুরু করে দিলো। ‘ভাই আব্দুল রাহমান,    এখন কোর্টে,’ উপদেশক বলল, ‘সুতরাং ভেবেচিন্তে উত্তর দাও।ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকে বলো যে হিন্দুদের মধ্যে বিশেষ বিশেষ সময়ে গলায় ওড়না বা দোপাট্টা পরার রীতি আছে। এবং তুমি সেরকমই কিছু অনুসরণ করেছো।’ সুতরাং আব্দুল রাহমান নিজেই এ ভাবেই সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিল সম্মানীয় ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকে।

সেরেস্তাদার এবার আব্দুল রাহমানের দিকে ফিরলো শপথ বাক্য পাঠ করাতেঃ ‘ঈশ্বরের নামে আমি শপথ নিয়ে বলছি, যা বল্বো সত্য বলবো, সম্পূর্ণ সত্য।সত্য ছাড়া মিথ্যা বল্বো না।’ আব্দুল রাহমান আবার নিজে নিজে এই শপথ বাক্য আওড়াল যেমনটি তার চিরায়ত স্বভাব, সেই ভঙ্গিতেই।

‘আপনার নাম কী?’

‘ভাই আব্দুল রাহমান, সেরেস্তাদার জানতে চাচ্ছে তোমার নাম,’ নিজেকে সে বললো।   তারপর কোর্টের দিকে মুখ করে সে বললো, ‘আমার নাম আব্দুল রাহমান।’

কোর্টের মধ্যে হাসির রোল পড়ে গেল।ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব কিছুক্ষণ উপভোগ করার পর বিরক্ত প্রকাশ করতে লাগলো।একজন উকিল অবশ্য বললো যে সাক্ষী এভাবে কথা বলতেই অভ্যস্থ।

‘আপনার ধর্ম?’

আব্দুল রাহমান চোখ বন্ধ করলো ভাববার জন্য। সে তার ভিতর থেকে একটি সতর্কবাণী শুনতে পে্লো।‘ভাই আব্দুল রাহমান,’ উপদেশক বলল, ‘আপনি শপথ নিয়েছেন সত্য বলার জন্য। প্রশ্নটি বেমানান।আপনি যদি বলেন মুসলিম তাহলে হিন্দুরা নিজেদেরকে ব্যতিক্রমভেবে সরে থাকবে। আর যদি বলেন হিন্দু তাহলে মুসলিমরা ভ্রুকুটি করবে।ভাই আব্দুল রাহমান হতভম্ব হয়োনা। মুশকিল আসান করো সাধু সাচালের কবিতা পড়েঃ

আমি হিন্দুও নই

আমি মুসলমানও নই

আমি যা আমি তাই।’

সেরেস্তাদারের জানা নেই এই উত্তর রেকর্ড করা হবে কি না? তাই সে সাহায্যের জন্য  ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে ঘুরলো।

‘লিখুন মুসলিম,’ ম্যাজিস্ট্রেট আদেশ করলো।

‘আপনার বয়স?’

‘উনাকে বলুন, ভাই আব্দুল রাহমান, যে প্রথম প্রশ্নের উত্তর আমার হয়ে উনি নিজেই দিয়েছেন। সুতরাং এই প্রশ্নটির উত্তর উনি আমার হয়ে নিজেই দিন।’

ম্যাজিস্ট্রেট ক্ষেপে গেলেন।

‘এই ‘জাঠ’!’ সে গর্জে ওঠে, ‘আপনি কী আপনার বক্তব্য যথাযত ও বিচক্ষণতার সাথে দেবেন।ভুলে যাবেন না আপনি এখন কোর্টে আছেন।’

আব্দুল রাহমানের ঠোটের উপর হাসি খেলে গেলো। সে নিজেকে বললো, ‘ভাই আব্দুল রাহমান,  ম্যাজিস্ট্রেট আপনাকে ‘জাঠ’ বলেছে। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকে জিজ্ঞেস করো ‘জাঠ’ কাকে বলে?’

আব্দুল রাহমানের ম্যাজিস্ট্রেটকে জিজ্ঞেস করার আগেই ম্যাজিস্ট্রেট, যিনি একজন সম্মানীয়  ভদ্রলোক, চিৎকার করে উঠলো, ‘হে বোকা, জাঠ একজন নিরক্ষর ব্যক্তি।’

‘তুমি কি শুনতে পেলে কথাটি, ভাই আব্দুল রাহমান? ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব বলছে জাঠ একজন নিরক্ষর লোক। এই সংজ্ঞা অনুসারে, ভাই আব্দুল রাহমান, তুমি নিশ্চিতভাবে একজন জাঠ হতে পারো না। তুমি সিন্ধি, পার্সি, উর্দু, সংস্কৃত, হিন্দি পড়তে ও লিখতে পারো। পাঁচটি ভাষা!তুমি কী জিজ্ঞেস করবে ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকে যে সে কটি ভাষা জানে?’

আব্দুল রাহমান ম্যাজিস্ট্রেটের দিকে ঘুরলো কথাটি পাড়ার জন্য, কিন্তু ভদ্রলোক তাকে দমিয়ে দিল।

‘জাঠ একজন যে ইংরেজি জানে না,’ ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব গর্বের সঙ্গে বললে এই আশা নিয়ে যে তার এই ভর্তসনা এই উৎকট ক্রেতাকে মাটিতে মিশিয়ে দেবে।

কোর্টের ভিতরে কানাঘুষা শুরু হয়ে গেলো। আব্দুল রাহমানের হাসি স্পষ্টতই দীর্ঘতর হলো। সে নিজেকে গোপন অথচ সবাই শুনতে পায় এই ভঙ্গীতে শুরু করলেন, ‘ভাই আব্দুল রাহমান,ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব বললেন জাঠ একজন যে ইংরেজি জানে না।যদিও সে (ম্যাজিস্ট্রেট)  ইংরেজি জানে আসলে সে হল একজন তোপানমালের পুত্র। আর তোপানমালের কাজ গরুর গোবর পাহারা দেওয়া।তুমি কি ম্যাজিস্ট্রেটকে জিজ্ঞেস করবে যে তাঁর পূর্বপুরুষরা যাঁরা ইংরেজি জানতো না, তাঁরা কি জাঠ ছিলেন?এবং সে নিজে  কি একজন সন্তান…’

‘অভব্য বদমাশ, আপনার কোন অনুমানটিই ঠিক নয়,’ ম্যাজিস্ট্রেট গর্জে উঠলো। “আপনি কি কারণ দর্শাবেন কেন আপনার বিরুদ্ধে কোর্ট অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না?’

আব্দুল রাহমানকে আর কোন কথা না বলতে আদেশ দেওয়া হলো। আর তার বক্তব্য লিখিত আকারে জমা দিতে বলা হো।

আব্দুল রাহমান উইটনেস বক্স থেকে নেমে এলেন এবং নির্দিষ্ট টেবিলটির উপর ঝুঁকে নিম্লিখিত বয়ান লিখলেনঃ

‘সম্মানীয় ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব, ভাই আব্দুল রাহমান কোর্ট অবমাননায় দোষী নয়।যদি কেউ দোষী থাকেন তাহলে সে আপনি নিজেই। শুধু আজকেই আপনি অনেক সাক্ষীকে অপমান করেছেন। কিন্তু আপনার অপমানকর ভাষা আব্দুল রাহমানের গদরির ঝালরকেও স্পর্শ করতে পারবে না। আমাকে এক চিলতে উপদেশ দিতে দিন।যদিও আপনি সকলের মাথার ’পরে বিচার দেওয়ার জন্য বসে আছেন, আপনি তাদের কাহারও প্রভু বা ভগবান নন। আপনি তাদের চাকর। আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে কোর্টে আসিনি।  আমাদেরকে ডাকা হয়েছে আপনার প্রশাসনিক কাজে সাহায্য করতে।আর আপনি আমদের সাথে এরকম ব্যবহার করলেন! আপনি যদি সাক্ষীদের এভাবে অপমান করেন তাহলে কে আপনার ডাকে কারণে অকারণে কোর্টে এসে হাজিরা দেবে?আপনি কি কারণ দর্শাবেন কেন আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না কোর্ট অবমাননার দায়ে? ভাই আব্দুল রাহমান শপথ পাঠের  মর্মানুসারে সত্য কথা বলেছেন, পুরো সত্য কথা বলেছেন, সত্য ছাড়া দ্বিতীয় কিছু বলেন নি। সুতরাং ঈশ্বর উনাকে সাহায্য করুন।

 

স্বাক্ষর

ভাই আব্দুল রাহমান’

 

*গল্পটি সহজিয়া, শারদ সংখ্যা ২০২০ তে প্রথম প্রকাশিত।

ব্রাদার আব্দুল রাহমান’ একটি সিন্ধি ছোট গল্প। লেখক অমরলাল হিঙ্গোরানি। ইংরেজি অনুবাদ করছেন টি এইচ আদবানি। গল্পটি নেওয়া হয়েছে ‘ইন্ডিয়ান শর্ট স্টোরিজ’ (১৯০০-২০০০)থেকে, সম্পাদনা, ই ভি রামাকৃষ্ণান, প্রকাশক, সাহিত্য একাদেমি, পুনর্মুদ্রণ ২০১৭।

Share This

Abu Siddik

Abu Siddik

It's all about the unsung , nameless men and women around us. I try to portray them through my tales. I praise their undying suffering and immaculate beauty. And their resilience to life's vicissitudes, oddities, and crudities I admire. They are my soulmates who inspire me to look beyond the visible, the known, the common facade of the educated and the intellectuals.

Related Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Categories

Top Comments

Subhash Chandra
Read More
"A gifted writer"

A gifted versetile writer who writes excellent stories and poems on the invisibles, pariahs, margins, aged, weaklings of our society. A rising star on the literary firmament.
Santosh Bakaya
Read More
Praise for my writing

“Your story Undersell left me with a lump in my throat, so did your poem, He also lights candles.”
Louis Kasatkin
Read More
Praise for my poem "Elderly Men Two"

"A finely honed observational piece recording the minutiae of everyday life. Rendered with the author’s customary poetic aplomb suffused with a Borges like quality of the mythic."

So glad to see you here!

Want to be the first one to receive the new stuff?

Enter your email address below and we'll send you my writings straight to your inbox.

Thank You For Subscribing

This means the world to us!

Spamming is not included! Pinky promise.